বৈশাখে ঘুরে আসুন অপরূপ সৌর্ন্দযে ভরা রামগড় পর্যটন লেকে
১৩ এপ্রিল ২০১৯, ১২:৩৬ পিএম

ছবি-সংগৃহীত
“দেখা হয় নাই চক্ষু মেলিয়া, ঘর হতে শুধু দুই পা ফেলিয়া” কবিগুরুর কবিতার লাইনটির যথার্থতা প্রমাণ করেছে পার্বত্য খাগড়াছড়ির রামগড়ের দৃষ্টিনন্দন প্রাকৃতিক পরিবেশে গড়া পর্যটন ষ্পটগুলি হাতছানি দিয়ে ডাকছে ভ্রমন পিপাসুদের।
খাগড়াছড়ির পার্বত্য জেলা সদর হতে ৫০ কিঃ মিঃ উত্তর-পশ্চিমে অবস্থিত রামগড় উপজেলা সদর। পার্বত্য চট্রগ্রাম উন্ন্য়ন র্বোড কর্তৃক নির্মিত রামগড় উপজেলা প্রশাসন কেন্দ্রীক ইংরেজী ডবিøও বর্ণমালার আকৃতিতে ২৫০ মিটার লম্বা রামগড় পর্যটন লেক। প্রাকৃতিক পরিবেশ বান্ধব এই মনোরম লেকে প্রবেশ দ্বারে ১নং গেইটে ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধের বীর মুক্তিযোদ্ধারে স্মতি বিজড়ীত বিজয় ভাস্কর্য্য এবং ডান পাশে রয়েছে ১৯৫২ ভাষা আন্দোলনের পর ১৯৬৮সালে রামগড় সরকারী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে পার্বত্যাঞ্চলে সর্বপ্রথম শহীদ মিনারের মূল স্তম্ভ র্নিমিত হয়েছিল স্মৃতি বিজড়ীত রামগড়ের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার।
রামগড় লেকটি অত্যান্ত আকর্ষনিয় ও দৃষ্টিনন্দন। চারপাশে রেলিং ঘেরা এবং বাহারি সাজে সজ্জিত। লেকের উভয় পাশে রয়েছে যানবাহন চলাচলের রাস্তা ও মাঝ খানে একটি সুদৃশ্য ঝুলন্ত সেতু। লেকের দুই তীরে রয়েছে আগত দর্শকদের বিশ্রামের জন্য ১২টি শেড। লেকের মাঝখানে রয়েছে ঝুলন্ত সেতুটি। কেবল জনসাধারণের চলাচলের জন্য সর্বদা উন্মক্ত থাকে তবে যানবাহন চলাচল সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ রয়েছে। পাশে রয়েছে একটি দ্বিতলা ভবন রয়েছে একটি রেষ্টহাউজ ।
লেকের পাশে উপজেলা প্রশাসন ভবনের পেছনে রয়েছে ১৭৯৫ সালের ২৯ শে জুন স্বল্প পরিসরে মাত্র ৪৪৮ জন সদস্য নিয়ে যাত্রা শুরু করা রামগড় লোকাল ব্যাটালিয়ন যা কালের বির্বতনে নাম ও ধাপ অতিক্রম করে বর্তমানে বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড (বিজিবি)র উৎপত্তিস্তল স্মৃতি বিজোড়িত স্মৃতিসৌধ। রয়েছে পোড়া মাটির টেরাকোটায় এ বাহিনীর বিভিন্ন বিবর্তনের অবয়ব। যা বিশ্ব দরবারে আজীবন রামগড়ের ইতিহাসকে স্বৃতিময় করে রাখবে। এই স্মৃতি স্তম্ভটি ৬ই জুন ২০০৫ইং সালে স্থাপন করা হয়। এর একটু দূরেই সীমান্তবর্তী ফেনী নদীর কিনারায় ১৯২০সালের প্রাচীন মহকুমা শহরের এসডিওর পুরানো ডাক বাংলো। রামগড় সদরে প্রবেশ দ্বারে রামগড় সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ের সম্মুখে রয়েছে বিশালকার স্বৃতিস্তম্ভ যা রামগড় সদরে প্রবেশের পূর্বে স্বাধীনতার মোহনায় স্বাগত জানায়।
তাছাড়া রামগড় উপজেলায় প্রবেশের পূর্বে সীমান্তবর্তী বিস্তিন্ন এলাকা জুড়ে রামগড় চা বাগান যেন প্রকৃতিতে পেখম মেলে দাঁড়িয়ে আছে। প্রতিদিনই খাগড়াছড়ি-ফেনী সড়কের দু‘দ্বারে হাজার হাজার যাত্রী প্রাণ ভরে উড়ে বেড়ান চা সবুজের এই সমারহে। বাগানের কেন্দ্র বিন্দুতে রয়েছে বিশালাকার প্রাকৃতিক একটি লেক। শীতকালে এখানে হাজার হাজার অতিথি পাখি মুগ্ধ করে ভ্রমন পিপাসুদের।
রামগড় সরকারী ডিগ্রি কলেজ সম্মুখে রয়েছে পাহাড় অঞ্চল কৃষি গবেষণা কেন্দ্র (সহেল বাগান), পাইলট বাগান, রামগড় সদর থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরে রয়েছে কলসীমুখ নামে আরও একটি দর্শনিয় স্থান। কলসীর আকৃতিতে একেঁবেকেঁ যাওয়া সীমান্তবর্তী এর মাঝে দ্বীপভূমি সদৃশ্য একটি পাহাড়ি গ্রাম । যার তিনদিক জুড়েই ভারত যা হাজার ফুট উচুঁতে অবস্থিত বিজিবি ক্যাম্প থেকে চমৎকার রূপ ধারন করে। আরো মুগ্ধ করবে সীমান্তবর্তী ফেনী নদী ও সর্ম্পূণ বাংলাদেশের ভুখন্ড হয়ে প্রবাহিত পিলাক নদীসহ অসখ্য সচ্ছ মিষ্টি পানির প্রবাহমান খাল-বিল, ছড়া, ফুলে ফলে ভরা লাউ-কুমড়োর ক্ষেত ভ্রমন পিপাসুদের পিপাসা মেটাবেই। যা ফেনী নদী ও পিলাক নদীর পানি একসাথে মিশে ভ্রমন পিপাসুদের জানিয়ে দিচ্ছে এক ভালোবাসার বন্ধনের বার্তা। রামগড় উপজেলার প্রানকেন্দ্রে অবস্থিত মহামনি এলাকায় ফেনী নদীতে বাংলাদেশ- ভারত মৈত্রী সেতু-১(স্থল বন্দর) ভ্রমন পিপাসুদে বারতি আনন্দ বাড়িয়ে দেবে। এদিকে রামগড় স্থলবন্দর নির্মাণের ছোঁয়ায় পার্বত্যাঞ্চলের লাখো মানুষের আর্থিক উন্নতির দ্বার খুলে যাবে এমনতাই আশায় অপেক্ষায় রয়েছেএখানে রয়েছে উপজাতি ও বাঙ্গালীর মধ্যে সম্প্রীতিসহ বৈচিত্রময় জীবন। তাদের সংস্কৃতি, নাগরিক জীবন যে কোন মানুষের আনন্দকে করবে পরিপূর্ণ ।